আজ সোমবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বইয়ের ওপর সেন্সরশিপ আরোপের কোনও পরিকল্পনা নেই ঃ ফারুকী

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ১১:১২ পূর্বাহ্ণ
বইয়ের ওপর সেন্সরশিপ আরোপের কোনও পরিকল্পনা নেই ঃ ফারুকী

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code

টাইমস নিউজ 

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, নতুন করে বইয়ের ওপর সেন্সরশিপ আরোপের কোনও পরিকল্পনা নেই। এটা একটা ভুল তথ্য। এটা ওই পুলিশ অফিসার যদি বলে থাকেন তিনি তার ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলেছেন।

Manual3 Ad Code

এটার সঙ্গে আমরা একমত না এবং আমরা কোনও বইয়ে কিংবা কোন ধরনের মত প্রকাশে সেন্সরশিপে বিশ্বাস করি না।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজন ‘জাতীয় কবিতা উৎসব-২০২৫’ এর দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে এই মন্তব্য করেন তিনি। উৎসবে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।

Manual7 Ad Code

বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রসঙ্গে ফারুকী বলেন, ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কারের সঙ্গে আসলে মন্ত্রণালয়ের কোনও যোগাযোগ থাকে না। বাংলা একাডেমি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দেখা গেলো, স্বায়ত্তশাসনের সুযোগের অপব্যবহারে ফ্যাসিবাদের দোসররা ওখানে ঢুকে গেছে, পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা অনেক অভিযোগ দেখেছি, বলা হয়েছে বিশেষ কিছু মানুষের পছন্দের প্রতিফলন এখানে ঘটেছে। এই সমালোচনাগুলো যখন ওঠে তখন মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব হয় , বাংলা একাডেমিকে জিজ্ঞেস করা; এটা আসলে কী হয়েছে, তারা যেন খতিয়ে দেখে। তারপর বাংলা একাডেমির পুরস্কার কমিটি আরেকটি সভা আহ্বান করে। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় তারা পুরস্কার স্থগিত করবে। স্থগিত করে দেখবে যে পুরস্কারের মধ্যে কী ঝামেলা হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের কথা আমাকে বাংলা একাডেমির ডিজি যখন হোয়াটসঅ্যাপে জানান, আমি জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় আমি ফেসবুকে পোস্ট করে জানাই। তার মানে এই না যে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্থগিত করার। এই পুরস্কার কে পাবে না পাবে এর মধ্যে আমার রুচির কোনও ছাপ নেই, কোন প্রভাব নেই।’

Manual4 Ad Code

তিনি আরও বলেন, ‘পুরস্কারের বিষয়টি বাংলা একাডেমি যখন রিভিউ করছিল তখন আমরা দেখতে পেলাম এখানে অনেক ঝামেলা আছে। সবচেয়ে বড় ঝামেলা হচ্ছে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয় ৩০ জন ফেলো। এখন ফেলো যারা হন, তারা হয় বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত , বা অন্য কোনভাবে। বাংলা একাডেমি পুরস্কার গত ১৫ বছর কারা পেয়েছেন? তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী, রাজনৈতিক যোগাযোগ কী এটা আপনারা সবাই জানেন। এমনকি বাংলা একাডেমির সদস্য হিসেবে দুইবার আবেদন করে সলিমুল্লাহ খানের মতো পণ্ডিত, বুদ্ধিজীবী, লেখক প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। সুতরাং এটা হচ্ছে বাংলা একাডেমি। আমরা দেখলাম যে এই একাডেমি একটা বিশেষ মতাদর্শের মানুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।’

পুরস্কার প্রদানের প্রক্রিয়ায় বড় গোলমাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বলা হলো এই ৩০ জন ফেলো মনোনয়ন দেবেন এবং মনোনয়নের খাম খোলা হবে পুরস্কার কমিটির মিটিংয়ে। উড়িয়ে দিতে পারি না যে অভিযোগগুলো আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখছি, যে এই মনোনয়নের মধ্যে দুর্নীতিটা হয়েছে। অর্থাৎ ফেলোদের মধ্যে কেউ কেউ প্রভাবিত করেছে কাউকে। এটা অভিযোগ পাওয়া গেছে, আরও তদন্ত করলে পাওয়া যাবে। অদ্ভুত ব্যবস্থা হচ্ছে এই যে, ওই সভায় খামগুলো খোলা হয় এবং কিছুক্ষণ পরেই নাম ঘোষণা করতে হয়। পুরস্কার কমিটিতে ৭-৮ জন লোক থাকে। তাদের সব লেখকের সব বই পড়া নাও থাকতে পারে। এই পুরস্কার কমিটির একজন সদস্য পুরস্কার প্রাপ্ত যেই দুইজনকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে , যারা ছড়ার নামে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা লিখেছেন, তাদের বইগুলো একটু পড়তে চেয়েছেন। তাদের বলা হয়েছে এরকম নিয়ম নাই, আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে ঘোষণা করতে হবে। অর্থাৎ তিনি কী লিখেছেন সেটা না জেনেই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এর চেয়ে বড় ত্রুটিপূর্ণ পুরস্কার আর কিছু হতে পারে কিনা আমার জানা নেই।’

Manual4 Ad Code

ফারুকী বলেন, ‘বাংলা একাডেমির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে, ৩০ জন ফেলোর আখড়া যেন না হয় এজন্য আমরা একটি সংস্কার কমিটি করবো। এখানে বাংলাদেশের নানান মতের, কোন নির্দিষ্ট কোটার না, সব বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষকের সমন্বয়ে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কার কমিটি করবো। আমরা যে কয়দিন দায়িত্বে আছি তার মধ্যে সেই সংস্কার কমিটি রিপোর্ট দেবেন বলে আশা করি। সেই আলোকে আমরা বাংলা একাডেমি ঢেলে সাজাতে পারবো, যাতে এটি একটা চলমান প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এটা একটা স্থবির প্রতিষ্ঠান হয়ে আছে এখন। এটা আমাদের জন্য আনন্দের না।’

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code