Sharing is caring!

টাইমস নিউজ
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠাতে আপত্তি নেই ভারতের । আমাদের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বেড়েছে। এখন বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের ১৭ দশমিক ১৩ ভাগ ভারত থেকে আসছে। ভারত-বাংলাদেশ টানাপোড়েনের মধ্যেই এই উৎপাদন বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে নানা টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়। ভারতের মিডিয়াগুলো ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারছে না’ বলেও সংবাদ প্রকাশ করে। বিশেষ করে আদানি তাদের ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে আনে। তবে এরপর সরকারের তরফ থেকে বিল পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এপ্রিল ও মে মাস গ্রীষ্ম এবং সেচের মৌসুম হওয়ায় এই সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সম্ভাব্য সব জায়গা থেকেই আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করি। ভারত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধির কারণও একই। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনার বিষয়টি নির্ভর করে চুক্তির ওপর। আমরা আর কোনও কিছুই এক্ষেত্রে বিবেচনা করি না। চুক্তির মধ্যে যতখানি বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব আমাদের প্রয়োজন হলে আমরা সেটা চাইবো। এর বাইরেও বেশ কিছু কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।’
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর ওয়েব সাইটে দেখা যায়, গত সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় ভারত থেকে আদানির ১৩০৩ মেগাওয়াট, ভেড়ামারা এইচডিভিসি ৯০৭ মেগাওয়াট এবং ত্রিপুরা দিয়ে ৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে এসেছে।’
তবে রাতে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় বিদ্যুৎ আসার পরিমাণ আরও বাড়ে। এদিন পিক আওয়ার বা সন্ধ্যায় আদানি থেকে ঘণ্টা প্রতি ১৩৬০ থেকে ১৩৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসেছে। এইচভিডিসি সাবস্টেশন দিয়ে এসেছে ৯১৫ মেগাওয়াট। তাছাড়া ত্রিপুরা থেকেও বিদ্যুৎ আসার পরিমাণ ২ থেকে ৪ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পায়।
ভারত থেকে বর্তমানে বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষমতা আছে ২৫৬০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ আসছে ২২৫২ মেগাওয়াট। এখন যে বিদ্যুৎ আসছে তা ইতিহাসের সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে।
ভারতের এইচভিডিসি সাবস্টেশন দিয়ে দৈনিক ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার ক্ষমতা থাকলেও কখনও ৯৬০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আসে না। এজন্য এই লাইন দিয়ে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার চুক্তি করেছে সরকার।
গ্রীষ্মে এখন সর্বোচ্চ চাহিদা ১৬ থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে গ্রীষ্মে গরম বেড়ে গেলে বিদ্যুতের ভোগান্তি কতটা বাড়ে সেটাই দেখার বিষয়।
যদিও এখনও তাপমাত্রা অনেকটা সহনীয় থাকায় পূর্ণ মাত্রায় শীতলীকরণ যন্ত্র চালাতে হচ্ছে না। বিশেষ করে বসাবাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র না চলাতে চহিদা এখনও পুরোদমে বাড়েনি।
সাধারণত গ্রীষ্ম বলতে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে জুন পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। সেই হিসেবে সাত থেকে ১০ দিন পর তাপমাত্রা বাড়লে চাহিদা বাড়বে। তবে বৃষ্টি হলে চাহিদা কমতে পারে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের ভোগান্তি খুব একটা বাড়বে না।