আজ বুধবার, ১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ব্রি ১১০ ধান আবাদে সফল কৃষক রিপন 

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ণ
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ব্রি ১১০ ধান আবাদে সফল কৃষক রিপন 

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code
এম.এ.মান্নান,নাগরপুর (টাঙ্গাইল)সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ঘিওরকোল গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম রিপন(৩৫) নতুন জাতের ধান আবাদ করে সফল। তার দাবি উপজেলায় এই প্রথম নতুন জাতের ব্রিধান-১১০ চাষে সফল হয়েছেন। তিনি ব্রিধান১১০ এর পাশাপাশি ব্রিধান ১০৭, ১০৩, ৯৭ জাতের ধানও আবাদ করেছেন।
কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম রিপন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আমি ইন্টারনেটে খোঁজখবর নিয়ে ধানের বিভিন্ন জাত সম্পর্কে অবগত হয়ে, ব্রিধান-১১০ জাতের ধান অবমুক্ত হওয়ার সাথে সাথে মাষ্টার সীড কোম্পানি কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করি। ধানের আবাদ খুব ভালো হয়েছে, তবে আবহাওয়ার কারণে আবাদকৃত জমির কিছু অংশ অতিবৃষ্টিতে মাটিতে নুয়ে পড়ে, আলহামদুলিল্লাহ আবাদ করে আমি সফল হয়েছি। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সহ সকল কর্মকর্তাগন আমাকে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, আমি গয়হাটা ইউনিয়নে কলিয়া ব্লকে দায়িত্ব পাওয়ার পর হতেই বিভিন্ন কৃষকের সাথে যোগাযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা, পাশাপাশি মাঠ পরিদর্শন নিয়মিত কার্যক্রমের অংশে কৃষক রিপনকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্যারের নির্দেশে পরামর্শ এবং সহযোগিতা করে এসেছি। নাগরপুরে এই প্রথম ব্রিধান-১১০ জাতের ধান কৃষক রিপন আবাদ করে সফল হয়েছেন, নমুনা শস্য কর্তনের সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, স্থানীয় কৃষকসহ আমরা উপস্থিত থেকে পর্যবেক্ষণ করলাম।
সরকারি ও বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, ব্রি ধান-১১০ জাতের ডিগ পাতা খাড়া, গাঢ় সবুজ, প্রশস্ত ও লম্বা। পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১২০ সেন্টিমিটার। জাতটির গড় জীবনকাল বন্যা মুক্ত পরিবেশে ১২৩ দিন। (দুই সপ্তাহের বন্যায় ১৩৩ দিন)। এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ১৯.৯ গ্রাম। চালের আকার লম্বা ও মাঝারি চিকন, রং সাদা। এ ধানের দানায় অ্যামাইলেজের পরিমাণ শতকরা ২৪ ভাগ। এ ছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৮ ভাগ এবং ভাত ঝরঝরে। এ জাতের ধানের দানার অগ্রভাগে এবং গাছের গোড়ার দিকের লিফশিথে কালচে গোলাপি বর্ণ দেখা যায়।
মাঠ পর্যায়ে উপকূলীয় জোয়ার-ভাটা ও অগভীর বন্যার পানিতে (১ মিটার) পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়। এটি লম্বা ও হেলে পড়া সহিষ্ণু ধান। গাছের উচ্চতা ১৬২ সেন্টিমিটার।এর গড় জীবনকাল ১২৩ দিন। বন্যামুক্ত এলাকার জন্যও জাতটি চাষাবাদ যোগ্য। ফলন পরীক্ষায় বন্যামুক্ত এলাকায় প্রতি হেক্টরে গড়ে ৬ টন এবং বন্যা প্রবণ এলাকায় প্রতি হেক্টরে গড়ে ৫ টন গড় ফলন দিয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে এ জাত হেক্টরে ৬.৬৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। গত ১১- ৩ -২০২৫ ইং বাজারে বিক্রির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস.এম. রাশেদুল হাসান জানান, নতুন ধানের জাত গুলি জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ এবং লবণাক্ততার মতো প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ধানের নতুন জাত সম্প্রসারণে কৃষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের অভিজ্ঞতা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিতে পারলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন আরও টেকসই হবে। কৃষি বিষয়ক যেকোন ধরনের পরামর্শ দিয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই কৃষি বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code