আজ রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাইনাস টু না কি মাইনাস ফোর ?

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code

টাইমস নিউজ

 

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান সেদিন।এরপর দেশের দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনীতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ করছে।সংস্কার কাজ শেষে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

এরমধ্যেই রাজনীতির অন্দর মহল থেকে মাঠে আলোচনা হচ্ছে এক-এগারোর ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা নিয়ে।তবে এবার শোনা যাচ্ছে, এক-এগারোর সময় ‘মাইনাস টু’ নয়; ‘মাইনাস ফোর’-এর পরিকল্পনা ছিল তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। বিষয়টি জানিয়েছেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ, যিনি এক-এগারোর সরকার নিয়ে গবেষণামূলক বই লিখেছেন।

Manual3 Ad Code

রাজনৈতিক বিশ্বেষকদের ভাষ্য, এখন এই ‘মাইনাস টু কিংবা মাইনাস ফোর’ ফর্মুলাটি আলোচনা এসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার বিষয় ঘিরে।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনীতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের বড় দাবি রয়েছে আন্দোলনকারীদের। ২০০৭ সালে এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারও রাজনীতিতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল।সে সময় আলোচিত হয়েছিল ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’।

তৎকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তা, সেনাপ্রধানসহ অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মহিউদ্দিন আহমদ। এ সময় রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার বিষয়টি বিশেষভাবে জানার চেষ্টা করেছেন। তার ‘এক এগারো’ গ্রন্থে আলাদা একটি অধ্যায় রয়েছে ‘মাইনাস টু’ শিরোনামে।

মহিউদ্দিন বলেন, যখন এক-এগারো নিয়ে বই লিখি তখনতো আমি ব্রিগেডিয়ার বারী ও জেনারেল মইন- এদের ইন্টারভিউ করেছিলাম। আমি একবার বারীকে (চৌধুরী ফজলুল বারী) প্রশ্ন করলাম, আপনারা ‘মাইনাস টু’ কেন চাচ্ছিলেন? তিনি বলেন যে আমরা কখনো ‘মাইনাস টু’র কথা বলি নাই, এটা মিডিয়ার সৃষ্টি। আমরা চেয়েছিলাম মাইনাস ফোর।

‘মাইনাস টু’ বলতে প্রধান দুই দলের শীর্ষ নেত্রীদের বোঝানো হয়। তবে ‘মাইনাস ফোর’র বাকি দু’জন কারা সেটি পরিষ্কার না হলেও মহিউদ্দিন আহমদ ধারণা পান যে বাকি দুজন হলেন দুই নেত্রীর ছেলে তারেক রহমান এবং সজীব ওয়াজেদ জয়।এইটা আমাকে ওই সময় বলেছিল।

সম্প্রতি বিএনপির অন্যতম সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্যে ‘এক-এগারো এবং মাইনাস টু’ প্রসঙ্গটি এসেছে। এক-এগারোর মতো বিরাজনীতিকরণের চক্রান্ত চলছে বলে বক্তব্য দেন তিনি।এ ছাড়া বিএনপির মহাসচিব তার এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘কেউ যেন মাইনাস টু ফর্মুলার কথা না ভাবে।’

Manual4 Ad Code

আবার মাইনাস ফর্মুলা আলোচিত হওয়া এবং এর সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সম্পর্ক আছে কি না- সেটি নিশ্চিত নয়। তবে মহিউদ্দিন আহমদের ধারণা মাইনাস ফর্মুলার একটা বিবেচনা থাকলেও থাকতে পারে।

মহিউদ্দিন বলেন, ‘ফোরের মধ্যে মাইনাস ওয়ান হয়ে গেছে ২০০৮ এ। আর পাঁচই আগস্ট আরও দুজন হয়ে মাইনাস থ্রি কমপ্লিট। এখন যদি খালেদা জিয়া বিদেশে চলে যান, তাহলে মাইনাস ফোর হয়ে যাবে। ওইটার ধারাবাহিকতাই আমার মনে হচ্ছে।’

‘মাইনাস ফর্মুলার’ বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি মনে করেন, ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকারের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা চলে না।

তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কেউ এগুলো উচ্চারণ করে কি না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা জনগণের সরকার। এটা গণঅভ্যুত্থান, গণবিল্পব-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট জনগণের সরকার। সুতরাং এখানে মাইনাস ফর্মুলার কোনো অস্তিত্ব এখানে নেই। এই সরকার আমাদেরই সরকার। আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করি। এই সরকারকে ওউন করি।’

Manual1 Ad Code

 

এক যুগ পর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যার মাধ্যমে ছয় বছরেরও বেশি সময় পর সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্য কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল।

নানা রোগে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার দাবিতে রাজপথে টানা আন্দোলন করেছে বিএনপি।বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি। চলতি বছরের গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় এবার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে আর কোনো বাধা নেই।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। বিদেশে দীর্ঘ যাত্রার জন্য খালেদা জিয়ার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয় জড়িত এখানে।ওনার মাল্টিপল কোমর্বিডিটিজ আছে তো। কাজেই সব জিনিস বিবেচনায় নিয়েই প্ল্যানিং করতে হয়। আমরা ইচ্ছা করলেই আমরা অন্য পেশেন্টের জন্য যেমন একটা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এনে তিন ঘণ্টায় সিঙ্গাপুর বা ব্যাংকক নিয়ে গেলাম আমাদের ইস্যুটাতো এরকম না।

তিনি বলেন, ‘ইস্যুটা হচ্ছে টেকঅফ ল্যান্ডিং একটা নেগেটিভ প্রেসার মেইনটেনই করে সেটার মধ্যে সাসটেইন করা সবকিছু মিলিয়ে ডাক্তার সাহেবরা সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। খুব সহসাই শারীরিক অবস্থা যাওয়ার মতো হলেই ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদেরকে জানিয়েই যাব।’

এদিকে খালেদা জিয়ার জন্য বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানান বিএনপির মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার সমস্ত আয়োজন মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। তবে দূরপাল্লার যাওয়ার মতো এয়ার অ্যাম্ব্যুলেন্স সংগ্রহ করাটার জন্য কিছুদিন বিলম্ব হচ্ছে। আশা করি ইতোমধ্যে ব্যবস্থা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই উনি যেতে পারবেন। প্রথমে তিনি যুক্তরাজ্যে যাবেন এবং সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পরে ওনার চিকিৎসক দলের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই খালেদা জিয়া বিদেশ যাবেন এবং সেজন্য সরকারি পর্যায় থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই।সূত্র: বিবিসি

 

Manual6 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code