আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিসংক্রান্ত সেবা নিতে ১৬ জেলার মানুষকে আসতে হবে ঢাকায়

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫, ০৪:১২ পূর্বাহ্ণ
ভূমিসংক্রান্ত সেবা নিতে ১৬ জেলার মানুষকে আসতে হবে ঢাকায়

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code

কামরুজ্জামান হিমু 

Manual8 Ad Code

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) ভূমির নামজারি, হস্তান্তর, ঋণ অনুমতি, যৌথ নির্মাণ, খণ্ডজমি বরাদ্দ ইত্যাদি সেবা নিতে এখন গ্রাহকদের আসতে হবে রাজধানী ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে।

যেটি আগে ১৬টি জেলা কার্যালয় থেকে নিষ্পত্তি হতো। সম্প্রতি একটি অফিস আদেশে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। জাগৃক বলছে, বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এটি করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রাহকদের অভিযোগ, জাগৃকের সেবা গ্রহণের হয়রানি ঘটনা বহুদিন ধরেই চলছে। আগে স্থানীয় পর্যায়ে ছিল, এখন সেটি ঢাকায় আনা হয়েছে। এখানে আরও যাতায়াত, হোটেল ভাড়া ও কাজ সাপেক্ষে টাকা দেওয়ার হয়রানি বহুগুণ বেড়ে গেল। এটি করার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখন ঢাকায় এসে ঘুরতে হবে দিনের পর দিন।

এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আজিজ হায়দার ভুঁইয়া বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে একটি সেবা নিতে দেখা যায়, সাত-আট বার ঘোরাচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রধান কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। নাগরিকদের হয়রানি যদি আরও বাড়ে তাহলে সে ক্ষেত্রে এটি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। দুর্নাম ও ভোগান্তি কমানোর জন্যই এটি করা হয়েছে।

Manual7 Ad Code

সারা দেশের কার্যক্রম ঢাকা থেকে পরিচালনা করার জনবল প্রধান কার্যালয়ে রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পুরোপুরি সক্ষমতা আসলে কোথাও নেই। না স্থানীয় পর্যায়ে, না প্রধান কার্যালয়ে।

এখন নতুন সিদ্ধান্তের পর ঢাকার বাইরে দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, নড়াইল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ সব জেলার বরাদ্দ গ্রহীতাদের অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় করে ঢাকায় আসতে হবে। এর আগে ভূমিসংক্রান্ত সেবা সহজ করতে উদ্যোগ নেয় জাগৃক। ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ সংস্থাটির তৎকালীন পরিচালক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস একটি অফিস আদেশ জারি করেন। সে আদেশে বলা হয়, সেবা সহজীকরণের সুবিধার্থে সব ধরনের জমি, প্লট, বাড়ি হস্তান্তর প্রথম মেয়াদে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে সমাধান করা হবে। এর পর থেকে এ ধরনের সেবাগুলো ঢাকা বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হচ্ছিল।

Manual6 Ad Code

গত ২৮ জানুয়ারি জাগৃকের উপপরিচালক তায়েব-উর-রহমান আশিক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ কার্যক্রম প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। ঐ অফিস আদেশে বলা হয়, বিভিন্ন সেবা গ্রহীতার আপত্তি থাকায় জনস্বার্থে নথিপত্রের জটিলতা পরিহার করতে সব নামজারি, হস্তান্তর, পুনর্নির্মাণ ও বন্ধকসংক্রান্ত কাজ জাগৃকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমোদন করা হবে। নতুন আদেশের ফলে দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রশাসনিক জটিলতাও তৈরি হবে বলেও আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

Manual4 Ad Code

জাগৃক থেকে সেবা নেওয়া খুলনার মনিরুজ্জমান বলেন, ভূমিসংক্রান্ত যে কোনো সেবা নিতে হলে কমবেশি বাড়তি টাকা গুনতে হয় এখানে। মাঠপর্যায়ের সার্ভেয়ার থেকে শীর্ষ স্তর পর্যন্ত কমবেশি নির্ধারিত হারে টাকা দিতে হয়। তা না হলে ফাইল নড়ে না। নানা অজুহাতে ফাইল ফেরত পাঠানো হয়। কোন কাজের জন্য কত টাকা দিতে হবে, তার একটা অঘোষিত দরও মোটামুটি সংশ্লিষ্টদের জানা। কিছু কর্মকর্তার লেনদেন ছাড়াই ফাইল ছাড়ার ঘটনাও ঘটে। তবে তা বিরল। নাম প্রকাশে একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূলত আর্থিক সুবিধার বিষয়টি নিয়েই কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেওয়ায় এমন নির্দেশনা এসেছে। এতে সাধারণ মানুষ আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। সেবা আরও কীভাবে এলাকাভিত্তিক নিশ্চিত করা যায় সেটি চিন্তা না করে এক কেন্দ্রীক করা হয়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি কমার চেয়ে আরও বাড়বে।

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code