আজ রবিবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চরম সংকটে অর্থনীতি : বিশ্বব্যাংক

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৭:১৬ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code

টাইমস নিউজ

Manual6 Ad Code

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি এখন সংকটময় অবস্থায় রয়েছে। আগামীতে আরও সংকটের মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা আছে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হচ্ছে। এ কারণে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ছে।

অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও বেশি সংকটে পড়ছে। এসব কারণে চলতি অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

Manual8 Ad Code

শুক্রবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস জানুয়ারি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

সংকট কাটাতে বাংলাদেশ সরকারের জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এর মধ্যে আছে, রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার করে আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য এনে আয় বাড়ানো, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সঠিক খাতে কার্যকর করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া। কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করলে অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে সংস্থাটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন সংকটময় অবস্থায় আছে। সরকারের নীতিনির্ধারকদের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যাতে অর্থনীতির গতিশীলতা দ্রুত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে স্বল্পমেয়াদে সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

Manual1 Ad Code

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে মন্দা, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং ঋণ পরিশোধের চাপসহ অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা কারণ এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। করোনা মহামারি পরবর্তী ধাক্কা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। সেই জটিল পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো বেরুতে পারেনি। যদিও বাংলাদেশ এসব সংকট মোকাবিলা করে সামনে এগোচ্ছে। কিন্তু সংকটের প্রভাবে জনজীবনে যেসব আঘাত লেগেছে সেগুলোর উপশম এখনো হচ্ছে না। এজন্য সরকারকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে হবে, রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর পথ সুগম করতে হবে।

Manual3 Ad Code

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রধান চালিকাশক্তি হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প। কিন্তু ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ক্রেতাদের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে ওইসব দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমে যাচ্ছে। ফলে সেসব দেশ থেকে আয়ও হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে আগামীতে এ খাতে নানা জটিলতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে বলা হয়, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে থাকায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমার কারণেও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

এর আগে অক্টোবরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে সৃষ্ট অস্থিরতায় প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে। এ হার ৪ শতাংশ হতে পারে। একই কারণে আইএমএফও প্রবৃদ্ধির হার কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা বলেছে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশ হতে পারে। নতুন পূর্বাভাসে বিশ্বব্যাংক প্রবৃদ্ধির হার সামান্য বাড়িয়েছে।

এদিকে জানুয়ারির শুরুতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, করোনা মহামারির পর ও বৈশ্বিক মন্দার ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ হার কমেনি। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো বাজারে তেমন কাজ করছে না।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code