আজ মঙ্গলবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্থির বাজার , চাল-ডাল-তেল-নুন সবকিছুর

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ১২:৫০ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual3 Ad Code

টাইমস নিউজ

আমনের ভরা মৌসুম। ভারত থেকেও আমদানি হচ্ছে চাল। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। তারপরও মিলারদের কারসাজিতে দামে অস্থিরতা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে সরু চাল সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি কেজিপ্রতি ৫-৭ টাকা বেড়ে মোটা চাল সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এতে মৌসুমেও চাল কিনতে বিরম্বনায় পড়ছেন ভোক্তা।

এ ছাড়া মাংসের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা।গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকা। অস্বস্তি মাছের দামেও। তবে সরবরাহ বাড়ায় কমছে সবজির দাম। শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮২-৮৫ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৭৫ টাকা ছিল। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০-৮৬ টাকা। যা আগে খুচরা পর্যায়ে ৭০-৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। যা আগে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি মাঝাড়ি আকারের চালের মধ্যে বিআর ২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Manual7 Ad Code

রাজধানীর কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও চাল বিক্রেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, দেশে আমনের ভড়া মৌসুম চলছে। কৃষকের নতুন চাল বাজারে এসেছে। বিক্রিও হচ্ছে। সঙ্গে ভারত থেকেও আমদানি করা চাল বাজারে এসেছে। এতে বেড়েছে সরবরাহ। চাহিদার তুলনায় কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, মিল থেকে হঠাৎ করে সব ধরনের চাল ৫০-১০ টাকা কেজিপ্রতি বাড়িয়েছে। যে কারণে পাইকারি বাজারে বাড়ায় খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে।মিল পর্যায়ে তদারকি করা গেলে দাম কমে আসবে। এতে ভোক্তারা উপকৃত হবে।

এদিকে মাংসের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। শুক্রবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। যা এক সপ্তাহ ধরে এই উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। পাশাপাশি সাদা লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা। দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকা।

Manual1 Ad Code

অস্বস্তি মাছের দামেও। বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও গরিবের পাঙাসের কেজি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশি কৈ প্রতি কেজি ৮০০, চাষের কৈ ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০, বাইম ৮০০, রুই মাছের কেজি ৩০০-৩৫০, বড় কাতল ৪৫০, ছোট কাতল ৩৫০, কার্প মাছ ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি পাবদা মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২৩০, চিংড়ি ৮০০, মলা মাছ ৩৫০ টাকা এবং শোল মাছ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০ টাকা।

Manual3 Ad Code

ছুটির দিন কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. হাকিম বলেন, বাজারে এসে দেখি হঠাৎ করে চালের দাম বেড়েছে। বাজারে কোনো কিছুর দামই স্থিতিশীল থাকে না। বিক্রেতারা একেক সপ্তাহে একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট কাটে। মাছের যে দাম তাতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। তাই মুরগির বাজারে এসে দেখি ব্রয়লার মুরগিও কেজিপ্রতি ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোনো কিছুতেই যেন স্বস্তি নেই।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকি করে। কিন্তু ভোক্তা এ থেকে কোনো সুফল পাচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে সেই স্তরে মনিটরিং হয় না। ফলে অসাধুরা এই সুযোগে ভোক্তাকে বেশি করে নাজেহাল করে তোলে। তার ভাষ্য, আর কয়েকমাস পরই রোজা শুরু হবে। এখন থেকেই যদি বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানো না হয়, ক্রেতারা আরও ভোগান্তিতে পড়বে।

এদিকে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দামে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ভোক্তা। বিক্রেতারা জানান, শুক্রবার প্রতি কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, গোল বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। কেজিপ্রতি শালগম বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৩০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পাকা টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বিচি ছাড়া শিম ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Manual7 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code