আজ সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাফলংয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন: পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ

editor
প্রকাশিত মে ২৩, ২০২৫, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ
জাফলংয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন: পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code
উৎফল বড়ুয়া, সিলেট:
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং জিরো পয়েন্ট, ডাউকি নদী, বালির হাওর, বাংলাবাজার ও বুধিগাঁও হাওরে ইজারাবিহীন ECA (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) ভুক্ত অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে ডেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, এই অবৈধ কার্যক্রমে নদীর তীর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের গোয়াইনঘাট শাখার আহ্বায়ক আজমল হোসেন বৃহস্পতিবার (২২ মে  ২০২৫) জাফলং জিরো পয়েন্ট, ডাউকি নদী, বালির হাওর, বাংলাবাজার, বুধিগাঁও হাওরসহ ইজারাবিহীন ECA ভুক্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে ডেজার মেশিনের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ক্ষতি করে বেআইনিভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা এবং ইজারাবিহীন এলাকা থেকে উত্তোলিত বালুর স্তূপ জব্দ করে দূষণকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসকের নিকট  লিখিত আবেদন করেছেন।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসন সিলেট থেকে বালু মহালের ইজারা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে গোয়াইনঘাট উপজেলার উল্লিখিত এলাকাগুলোতে বালু উত্তোলনের কোনো বৈধ ইজারা দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ডেজার মেশিন ব্যবহার করে ব্যাপক পরিমাণে বালু উত্তোলন করছে, যা নদীর তীরে ভাঙন সৃষ্টি করছে এবং কৃষিজমি ধ্বংস করছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন কয়েকবার অভিযান চালিয়ে বালু জব্দ করলেও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। এমনকি জব্দকৃত বালু নিলামও করা হয়নি, যা দুষ্কৃতিকারীদের সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে। আজমল হোসেনের দাবি, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা এলাকাবাসীকে হুমকি দিচ্ছে এবং যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যেই প্রায় পাঁচ কোটি ঘনফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদীর পাড়ে স্তূপ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। এই বালু জব্দ করে নিলামের আওতায় আনা না হলে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (২০২৩ সালের সংশোধনীসহ) লঙ্ঘন করে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ও তাদের সহযোগীরা কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আজমল হোসেন জেলা প্রশাসকের কাছে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে নদী, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ডাউকি নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যটন নির্ভর এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত। এখন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপই পারে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করে এলাকার পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষা করতে।
Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code