আজ শুক্রবার, ২৪শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক শক্তিশালী হওয়া উচিৎ ঃ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual4 Ad Code

টাইমস নিউজ

Manual3 Ad Code

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ছিল ‘মিথ্যা’।

তিনি অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনার দুর্নীতি নিয়ে বিশ্ব প্রশ্ন না করায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভা চলাকালে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) দাভোসে সবাইকে দেশ চালানোর শিক্ষা দিতেন। কেউ তা প্রশ্ন করেনি। এটি ভালো বিশ্বব্যবস্থা নয়।

৮৪ বছর বয়সী ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি বলতেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি হার সবার চেয়ে এগিয়ে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রবৃদ্ধি। পুরো পৃথিবী এটি ঘটাতে সাহায্য করেছে। এটি বিশ্ববাসীর জন্য বড় শিক্ষা।

রয়টার্সের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন এবং এ সময়ে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পসহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বাকস্বাধীনতা দমন ও ভিন্নমত দমনের অভিযোগ রয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যা, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তবে দিল্লি এখনও কোনও সাড়া দেয়নি।

Manual7 Ad Code

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে উল্লেখ করলেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির হার নয়, বরং সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের মানুষের জীবনমান উন্নত করাই আমার লক্ষ্য।

Manual7 Ad Code

শেখ হাসিনার শাসনামলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছায়, যা ২০০৯ সালে তার ক্ষমতা গ্রহণের সময় ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। তবে কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এই প্রবৃদ্ধি কমে আসে। বিশ্বব্যাংক ২০২৩ সালে বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্রুততম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর একটি হিসেবে অভিহিত করে।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও এই টানাপোড়েন ড. ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে আহত করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সবচেয়ে শক্তিশালী হওয়া উচিত। আপনি ভারতের মানচিত্র আঁকতে পারবেন না, যদি বাংলাদেশের মানচিত্র না আঁকেন।

এই কঠিন সময়ে ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে বাংলাদেশের ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের এই অবস্থা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে কষ্ট দেয়।

Manual5 Ad Code

বাংলাদেশে নতুন নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ইউনূস বলেছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক পদে আগ্রহী নন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৬ সালের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

‘দরিদ্রদের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূস বলেছেন, আমি প্রবৃদ্ধি হার নিয়ে উৎসাহী নই। আমি এমন একটি অর্থনীতি চাই, যা সম্পদের কেন্দ্রীকরণ এড়াতে এবং সমাজের সবচেয়ে দুর্বল শ্রেণির জীবনমান উন্নত করতে পারে।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code