Sharing is caring!

তিমির বনিক:
মৌলভীবাজারে পৃথক পৃথক দুর্ঘটনায় এক তরুণ ও এক নারীর মৃত্যু ঘটেছে।
মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুর্লভপুর এলাকায় বাস-অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়। শনিবার (২রা আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা হবিগঞ্জ-সিলেট বাস মালিক সমিতির দুটি বাস ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে করে দেড় ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এতে করে দেখা দেয় তীব্র যানজটের। নিহত আল-আমিন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, সিলেটগামী ‘হবিগঞ্জ বিরতিহীন এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সার আরোহী আল-আমিন মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন আরও ৩জন। আহত ৩জনকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতদ্বয়েরা হলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার জিয়াউর রহমানের ছেলে আব্দুর রশিদ (২৮), মিন্নত আলীর ছেলে হযরত আলী (২৮) ও আব্দুস শহীদের স্ত্রী মিনা বেগম।
মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় আহতরা হাসপাতালে আসলে ১জনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। অন্যান্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় ১জন নিহত ও ৩জন আহত হয়েছেন। বাসটি আটক করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অপর দিকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে কাঁটা পড়ে হাওয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে এই ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্থানীয় ও রেলওয়ে পুলিশ সুত্রের বরাতে জানা যায়, হাওয়া বেগমের ডান হাত কাঁটা পড়ে গেছে। মৃত নারী ট্রেনেই ভিক্ষা করে জীবন চালাতেন। শনিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে ট্র্রেনের চাকায় তার দুটি পা কেটে যায়। পড়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্বার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিলেন। কিছু সময় পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর পোদ্দার সম্রাট বলেন, সকাল ১১টার দিকে ট্রেনে কাঁটা পড়ে আহত এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসাপত্র প্রদান করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করি। তবে মৌলভীবাজার নেওয়ার আগেই ইসিজি করে নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ট্রেনে কাঁটা পড়ে নিহত নারীর নাম হাওয়া বেগম বলে জানা গেছে। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।