আজ মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে টি-ট্যুরিজম প্রসারে পথচলার নতুন অঙ্গীকার

editor
প্রকাশিত আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৪:০০ অপরাহ্ণ
শ্রীমঙ্গলে টি-ট্যুরিজম প্রসারে পথচলার নতুন অঙ্গীকার

Sharing is caring!

তাপস দাশ শ্রীমঙ্গল:
বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। সবুজে ঘেরা এই জনপদে পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা সামনে আনতে অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ কর্মশালা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে উপজেলার পর্যটকবান্ধব গ্রাম রামানগরের হোটেল প্যারাগনে আয়োজিত হয় কর্মশালা— “টি-ট্যুরিজম প্রসারে করণীয়”। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই কর্মশালায় অংশ নেন চা-বাগান মালিক, পর্যটন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা, স্থানীয় ট্যুর অপারেটর ও ইকো-গাইডরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন। প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লায়লা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক সালেহা বিনতে সিরাজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, টি-ট্যুরিজম শুধু নতুন ধরনের পর্যটন নয়, বরং দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। ইতিমধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, চীন ও কেনিয়ার মতো দেশে চা-কেন্দ্রিক পর্যটন বিপুল সাফল্য পেয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশেও একই ধরণের অগ্রগতি সম্ভব।
কর্মশালায় ট্যুর অপারেটর ও উদ্যোক্তারা শোনান মাঠের অভিজ্ঞতা। বৈশাখী ট্যুরিজমের সিইও শফিকুল ইসলাম রুম্মন, রাহা ট্যুরিজমের লুৎফুর রহমান এবং গ্রীন লিফ ইকো ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী তাপস দাশ— সবাই তুলে ধরেন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা।
এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন ফিনলে টি কোম্পানির সিইও, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, টি বোর্ডের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা, স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
লাউয়াছড়ার পুঞ্জির মন্ত্রি ফিলা পথমী এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে মিশে যান আলোচনার মূল স্রোতে।
স্থানীয় ট্যুর অপারেটর ও গাইডরা জোর দিয়ে বলেন,  “ঢালাওভাবে সব চা-বাগান পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত নয়। বরং বাছাইকৃত দু’একটি বাগানকে সুনির্দিষ্ট নীতি ও শৃঙ্খলার আওতায় এনে এই উদ্যোগ শুরু করা প্রয়োজন। এতে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ ও শ্রমজীবী মানুষের জীবনধারা সুরক্ষিত থাকবে, তেমনি স্থানীয় ট্যুর গাইড-অপারেটর, পর্যটন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও চা-বাগানের শ্রমজীবী মানুষের জন্যও নতুন কর্মসংস্থানের পথ খুলে যাবে।”

তাদের মতে, “এই মানুষরাই আসলে টি-ট্যুরিজমের মূল স্টেকহোল্ডার। তাই তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল সহযোগিতা ছাড়া এধরণের উদ্যোগ টেকসই হতে পারে না।”

অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, দায়িত্বশীল ও টেকসইভাবে টি-ট্যুরিজম বাস্তবায়িত হলে শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য রক্ষা পাবে এবং দেশের পর্যটনে যুক্ত হবে নতুন অধ্যায়।