Sharing is caring!
মোঃ জাফর ইকবাল মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারে লন্ডন প্রবাসী দেবরের বাসা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কৃষক দলের আহবায়কের ভাতিজি সফিয়া সুলতানা সাফা উপর।
শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা সাফা দক্ষিন কলিমাবাদ “রহমান ভিলা”, ৪১/৭, বাসায় কিছু সন্ত্রাসী সহ বাসা দখলের চেষ্টা করেন। তার স্বামী কাইয়ুমুর রহমান ইকবাল বাঁধা সৃষ্টি করেন। বাসার ভিতর থেকে তালা দিলে তার স্ত্রী ও তার সাথে আসা ভোকের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হন। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। যেকোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
এসময় আখাইলকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবেক চেয়ারম্যান কৃষক দলের আহবায়ক শামীম আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে চেয়ারম্যান বলছেন, ঔই দিন ভাতিজিকে তার স্বামী বহিরাগত সহ লোক নিয়ে নির্যাতনের খবর পেয়ে দক্ষিণ কলিমাবাদ বাসায় গিয়েছিলেন। সাফিয়া সুলতানা সাফা দক্ষিন কলিমাবাদ রহমান ভিলাল দখল সংক্রান্ত সোস্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। দেখা যায় বাসার ভিতর তার স্বামী অবস্থান করে বাসায় তার কোন প্রকার মালিকানা নেই বলার পর তার স্ত্রী ও সাথে আসা লোকদের সাথে ঝগড়া বেঁধে যায়। তার চাচা আখাইলকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষক দলের আহবায়ক শামীম আহমদ সাথে ছিলেন। পরবর্তীতে স্বামী কাইউমুর রহমান ইকবাল বাসা তালা মেরে ভিতরে অবস্থান নেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।
মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের মামলা ও মামলার বাদী সোলেনামা দিয়ে নিস্পত্তি সংক্রান্ত কাগজ পত্র থেকে জানাযায়, বরমান গ্রামে লন্ডন প্রবাসী আব্দুর রহমান,২০০৬ সালে ১৭১০/০৬ নং দলিল মুলে দক্ষিন কলিমাবাদ ১০.৭৭শতক জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে ৪৮৬৪ নং হেবা দলিল মুলে মেয়ে জেবুনেছা খানম ও ২০১১ সালে ৩৪৩১ নং হেবা মুলে দলিল করে দেন ছেলে মুহিবুর রহমানকে । ২০২২ সালে তাদের ভাই ইমজি রহমান কে তার বোন জেবুনেছা ও ভাই মুহিবুর রহমান তাদের মালিকানা বাসার. ০ ৫ শতক জমি দলিল করে দেন। পরবর্তীতে তাদের আরেক ভাই কাইমুর রহমান ইকবাল কে ভাই মুহিবুর রহমান. ৪৮০শতক বাসার জমি ক্রয় করে দেন। পিতা আব্দুর রহমান লন্ডনে মারা যাবার পর কাইমুর রহমান ইকবাল মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৩৯/২৫ নং স্বত্ব মামলা করেন কাইমুর রহমান ইকবাল। পরে মামলার বিরোধীয় বিষয় আপোষ হওয়ায় মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন ও পিতা আব্দুর রহমানের হেবা দলিল সঠিক বলে সোলেনামা আদালতে দাখিল করেন। কিন্তু কাইমুর রহমান ইকবাল এর স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা সাফা বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি । তার দাবী বাসা তার লন্ডন প্রবাসী মৃত শ্বশুর আব্দুর রহমানের নামে ছিল। এই বাসায় তার স্বামী কাইয়ুমুর রহমান ইকবাল এর স্বত্ব রয়েছে। কিন্তু কাইমুর রহমান ইকবাল বিষয়টি পরিস্কার করে রহমান ভিলার বাসায় তার কোন স্বত্ব নাই। এক সময় তিনি ভুল বশত অন্যের প্ররোচনায় মামলা দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে সাফিয়া সুলতানা সাফার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
কাইয়ুমুর রহমান ইকবাল বলেন, বাসা আমার ২ ভাই ২ আর ১ বোনের। আমার পিতা ও ভাই মিলে আমাকে ৬৮ লাখ টাকায় আলাদা বাসা কিনে দিয়েছেন।
আমার স্ত্রী আখাইলকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষক দলের আহবায়ক শামীম আহমদে ভাতিজি। সবকিছু আমার শ্বশুর বাড়ি চক্রান্তে আমি মামলা করে ছিলাম।আমার ভাই বোনের সাথে বাসার ঝামেলা শেষ করে ফেলেছি। সেখানে আমার কোন স্বত্ব নাই। আমার স্ত্রীর কিভাবে দাবী করে। ।
কাইয়ুমুর রহমান ইকবালের ভাই প্রবাসী ইমজি রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বাসা নিয়ে একটা প্রবলেম চলছে। কাইয়ুমুর রহমান ইকবালের স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা সাফা তার চাচা শামীম আহমদ মিলে আমার বাসা দখল করতে চাচ্ছে। ৫ বছর আগে আমার আব্বা দেশে গিয়ে ৬৮ লাখ টাকা দিয়ে আমার ভাইকে একটা বাসা কিনে দিয়েছেন।তারা ঔ বাসায় বিক্রি করে ফেলেছে। এখন বলছেন আরোও ৪০ লাখ টাকা দিলে আমাদের বাসার দাবী ছেড়ে দিবে। মৌলভীবাজার মডেল থানা এস আই রানা মিয়া সাথে কথা বললে সব কিছু জানতে পারবেন।
আখাইলকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপির কৃষক দলের আহবায়ক শামীম আহমদ মুঠোফোনে বলেন, আমি অন্য বাসা দখল করতে যাবো কেন? কাইয়ুমুর রহমান ইকবাল একটি খারাপ ছেলে। আমার ভাতিজিকে নির্যাতন করার কারনে পুর্বেও তালাক নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ১৯ ডিসেম্বর আমার ভাতিজিকে তারা স্বামী ইকবাল বাহিরে লোক নিয়ে এসে নির্যাতন করেছে শুনে আমি দেখতে গিয়েছিলাম তার বাসায়। আজ থেকে ওদের সাথে কোন সম্পর্ক রাখবো না। বিএনপির কৃষক দলের দাপট দেখানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন দলের ক্ষমতা ও দাপট দেখাইনি, এ গুলো সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
মৌলভীবাজার মডেল থানা এস আই রানা মিয়া বলেন, লন্ডন প্রবাসী ইমজি রহমান এর বাসা। ইকবালকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই বাসাটা কার,সেই বলছে লন্ডন প্রবাসী ইমজি রহমান বাসা। তাকে অন্য একটি বাসা কিনে দিয়েছেন। তার স্ত্রী ভাইয়ে বাসা ছেড়ে যেতে চাচ্ছেনা। আমি বিষয়টা সাবেক চেয়ারম্যান শামীম আহমদকে ডেকে নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাকে সঠিক উত্তর না দিয়ে চলে গেলেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, একবার আমার কাছে বিচার নিয়ে দুই পক্ষ এসেছিলো। পরে আর বসেনি। বিএনপি কৃষক দলের আহবায়ক আহবায়ক শামীম আহমদ এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,শামিম আহমদকে আপনারা জিজ্ঞাসা করেন। আমরা শুনিনি,মানুষরা এলোমেলো ভাবে কথা বলছে। কিন্তু গভীর ভাবে কেউ আমাদেরকে বলেনি।
মৌলভীবাজার মডেল থানা ওসি মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন এ বিষয় আমার জানা নেই ,জেনে পরে আপনাকে জানাবো।