Sharing is caring!

আকরাম হোসেন হিরন,কাপাসিয়া প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে কৃষকদের “পার্টনার কংগ্রেস ২০২৫” অনুষ্ঠিত হয়েছে । দিনব্যাপী এই কংগ্রেসটি আয়োজন করা হয় “প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)” প্রকল্পের আওতায়।
কাপাসিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডাঃ তামান্না তাসনীম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, গাজীপুরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোঃ নূরুল ইসলাম।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুমন কুমার বসাক অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে কংগ্রেস এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তারের পরিচালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ সিরাজুল ইসলাম, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সৈয়দ শাকিল আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অলি ভৌমিক, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ এজাজ মিয়া, বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার ফকির মনি, নারী কৃষি উদ্যোক্তা খাদিজা খানম, আদর্শ কৃষক হযরত আলী মেম্বার, ফাতেমা আক্তার, আরমান হোসেন প্রমুখ। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ আকন্দ।
এছাড়া পার্টনার কংগ্রেস কৃষক সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা, সামাজিক প্রতিনিধি ও কৃষক-কৃষাণিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা, পার্টনার কংগ্রেস প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ প্রযুক্তি, কৃষিতে দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণার পরিবর্তন, কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার, যান্ত্রিকীকরণ, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, কৃষিপণ্যের মূল্য শৃঙ্খলা এবং টেকসই কৃষি প্রযুক্তি ও কলাকৌশল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়া কৃষি খাতের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কার্যকর দিকগুলো প্রজেক্টরের মাধ্যমে সচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
কংগ্রেস সভায় জানানো হয়, ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৪টি কৃষক সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। প্রতি সংগঠনে ২৫ জন করে সদস্য প্রশিক্ষণ ও সনদপত্র গ্রহণ করেছেন। প্রশিক্ষণার্থীরা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকদের সহায়তা, কলাকৌশল শিখানো ও পরামর্শ দিবেন। সদস্যরা সমবায় সমিতি গঠন করে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করবেন। তারা সুবিধা মতো সঞ্চয় জমা করবেন। ফলে কৃষিখাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পন্যের সঠিক মূল্য পায়, সে বিষয়েও সমিতির পক্ষ থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত কাঁঠাল সংরক্ষণ করতে না পারায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বরুন গ্রামের নারী উদ্যোক্তা খাদিজা খানম কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাতকরণ করে সফল হয়েছে। কাঁঠাল দিয়ে তাঁর তৈরি চিপস, জেমস, জেলি এখন সে নিয়মিত বিদেশে রফতানি করে লাভবান হচ্ছেন। সভায় কৃষকদের উৎপাদিত পন্যে মাত্রাতিরিক্ত কিট নাশক ব্যবহার এবং তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকরও বিবেচনা করে ব্যবহারবিধি মেনে চলার জন্য প্রধান অতিথি সবার প্রতি আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত ২০২৮ সাল নাগাদ এ পার্টনার কংগ্রেস প্রকল্পটি পরিচালিত হবে। নির্দিষ্ট সময়ে এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হলে উদ্যোক্তা কৃষক-কৃষাণীরা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।