আজ মঙ্গলবার, ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুড়ী শহর যেন ময়লার ভাগাড়: বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

editor
প্রকাশিত জুলাই ৫, ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
জুড়ী শহর যেন ময়লার ভাগাড়: বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

Sharing is caring!

Manual4 Ad Code

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী থেকেঃ

“বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় ময়লা আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা। নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় প্রতিদিন যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। এতে প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ।”

আঞ্চলিক মহাসড়ক, উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়ক, বাজারের কেন্দ্রস্থল, রাস্তা-ঘাট, অলি-গলি, নদীর পাড় সহ যত্রতত্র বর্জ্য ফেলায় পুরো শহর যেন ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার কারণে দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে চারদিকের পরিবেশ। ফলে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিশুরা। এছাড়া হাসপাতালের বর্জ্য, খাবার হোটেলের পঁচা বাসি খাবার, দোকানপাটের আবর্জনাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা শহরের প্রবেশ মুখে ফেলা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে।

Manual8 Ad Code

বিশেষ করে, উপজেলার কমপ্লেক্সের সামনের আঞ্চলিক মহাসড়ের নাইট চৌমুহনী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ সড়কে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

Manual5 Ad Code

সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক বা রাস্তা-ঘাটের পাশেই ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এসব ময়লা-আবর্জনা পঁচে দুর্গন্ধে মানুষের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তার ওপর সামান্য বৃষ্টিতেই এসব এলাকার সড়ক বা রাস্তার পাশে ফেলা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতেও চরম দুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ‘শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্হানগুলোতে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় প্রায় শহর জুড়েই ময়লার ‘ভাগাড়’ তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েও সৃষ্ট সমস্যার কোন সমাধান হয় নাই’। ফলে সমস্যা দিনকে দিন বাড়ছেই।

২০০৪ সালে জুড়ী উপজেলা ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শহরের সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণে কোন সরকারি উদ্যোগ না থাকায় সচেতন মহল ক্ষোভ জানিয়েছেন। সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করছে অচিরেই যেন শহরের বাহিরে ময়লা আবর্জনা ফেলার একটি নির্দিষ্ট জায়গা করে উপজেলা প্রশাসন।

এ সড়কে চলাচলকারী জুড়ী মডেল একাডেমির শিক্ষার্থী নৌরিন, মাইশা ও রিয়া বলেন, ‘আপনারা এক দিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে বুঝতেন আমরা কী যন্ত্রণায় আছি। ময়লা আবর্জনার স্তুুপের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে বমি আসে। দিনকে দিন এসব ময়লা আবর্জনার কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। অচিরেই শহরের বাইরে ময়লা আবর্জনার নির্দিষ্ট জায়গা করার জোড় দাবি জানাই।

Manual7 Ad Code

জুড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি তানজীর আহমেদ রাসেল ও জুড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা এক দিনের সমস্যা নয়। বছরের পর বছর ধরে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলায় ভাগাড় তৈরি হয়েছে। কেউ খোঁজ নেয় না। কেউ শোনে না। কী গন্ধ, বলে বোঝানো যাবে না’। আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে বার বার এবিষয়ে নিয়ে আলোচনা হলেও কোন সমাধান হচ্ছে না।

বর্জ্য ব্যবস্থার এমন চরম ভোগান্তি দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। পরিবেশবিদ উপাধ্যক্ষ ফরহাদ আহমেদ বলেন, যেখানে সেখানে ও নদীতে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশের বিপর্যয়সহ বাড়ছে নদী দূষণ।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে অচিরেই নেওয়া হবে সরকারি উদ্যোগ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর বলেন, সরকারি খাস জমি অথবা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা প্রাপ্তি সাপেক্ষে শহরের বাইরে ময়লা আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Manual4 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code