আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে কারণে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছেন মার্কিন ক্রেতারা

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৮, ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ
যে কারণে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল  করেছেন মার্কিন ক্রেতারা

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code

টাইমস নিউজ 

 

মার্কিন শুল্কের বিষয়টি গায়ে মাখে নি বাংলাদেশ সরকারের কেউ কেউ । বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেছেন,এটা একটি ভালো সংকেত। আমরা এটাকে ব্যবহার করে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করবো।

কিন্তু এবার আরেকটি ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। দেশটির তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে শুরু করেছেন মার্কিন ক্রেতারা। সোমবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এ তথ্য দিয়েছেন। ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

এসসেনর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেছেন, ব্যাগ, বেল্ট আর ওয়ালেটসহ প্রায় তিন লাখ মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের চামড়াজাত পণ্য রফতানির অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এই শিপমেন্ট স্থগিত রাখাতে রবিবার একটি চিঠি পেয়েছি। অথচ ওই ভদ্রলোক আমার দীর্ঘদিনের ক্রেতা।

Manual1 Ad Code

২০০৮ সাল থেকে রফতানি ব্যবসায় আছেন জনাব রহমান। প্রতিমাসে গড়ে লাখ ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে থাকেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

Manual1 Ad Code

বাংলাদেশের মোট রফতানি বাণিজ্যের ৮০ শতাংশের মতোই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলার মূল্যমানের দ্রব্য রফতানি করেছিল দেশটি। এরমধ্যে তৈরি পোশাকের অর্থমূল্য ছিল প্রায় ৭৩৪ কোটি ডলার।

গত আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রাথমিকভাবে অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়ে তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন। কয়েকমাসে অনেকটা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও নতুন মার্কিন শুল্কের আঘাতে আবারও যেন খড়্গ নেমে আসে পোশাক শিল্পের ওপর।

আগে থেকেই বাংলাদেশের তুলাজাত পণ্য মার্কিন মুলুকে আমদানিতে ১৬ শতাংশ শুল্কের বোঝা ছিল, সেটাকে একলাফে ৩৭ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প।

Manual4 Ad Code

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এএফপি জানিয়েছে, উইকিটেক্স বিডির দেড় লাখ ডলার মূল্যের শিপমেন্ট স্থগিতের অনুরোধ করেছেন মার্কিন ক্রেতারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, শুল্ক জারির পর এই পণ্য নিলে বাড়তি দামের বোঝা বইতে হবে সাধারণ মার্কিন ভোক্তাদের। তাই, মূল্য না কমালে সেটা নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

Manual4 Ad Code

পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় মার্কিন ক্রেতাদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন বিজিএমইএ-এর সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন। তিনি বলেছেন, শুল্ক নীতি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। কিন্তু উৎপাদকদের ওপর সরাসরি সব বোঝা চালিয়ে দিলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বৃদ্ধিই পাবে। বাংলাদেশ এই সংকট সমাধানের যুক্তিসংগত একটি উপায় খুঁজছে। এ সময় আমাদের সমর্থন দিতে সবাইকে অনুরোধ করছি।

এদিকে, বিজিএমইএ-র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এএফপিকে বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শিপমেন্ট স্থগিত রাখতে চিঠি দিয়েছেন অধিকাংশ ক্রেতা। বিশেষত, তুলনামূলক ছোট ক্রেতাদের আবদার, হয় বাংলাদেশি রফতানিকারকরা শুল্কের পুরো আঁচ সহ্য করুক নতুবা বাড়তি খরচা দুপক্ষের মধ্যে ভাগ করে নিক। আমার কাছে এটি মোটেই নৈতিক কোনও চর্চা মনে হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেছেন, বড় ক্রেতারা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাদের কর্মসপ্তাহ তো কেবল (সোমবার) শুরু, তাই আশা করছি, দুই একদিনের মধ্যে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। শুল্কের এই বোঝা সম্পূর্ণভাবে রফতানিকারকদের পক্ষে বহন করা অত্যন্ত কঠিন হবে। আমার বিশ্বাস, কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের অপেক্ষা করা উচিত।

ক্রেতারা দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন রুবেল। তিনি বলেন, ওপেন-কস্ট ব্যবসায়িক মডেলে ক্রেতারা সরবরাহকারীদের লাভের সীমা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন। আমরা আশা করি, ব্র্যান্ডগুলো তাদের সরবরাহকারীদের পরিস্থিতি এবং এর সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার প্রশাসনের প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, শুল্ক ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বরাবর চিঠি লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code