আজ শুক্রবার, ১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরঃ উত্তেজনা ও কৌতূহল

editor
প্রকাশিত জুন ৮, ২০২৫, ০৫:১৭ অপরাহ্ণ
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরঃ উত্তেজনা ও কৌতূহল

Sharing is caring!

লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া,

 

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের এক সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন। সফরটি ঘিরে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তৈরি হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী আলোড়ন, মতপার্থক্য এবং কূটনৈতিক কৌতূহল।

যুক্তরাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে আয়োজিত এ সফর নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট। একদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রবাসী গোষ্ঠী সফরের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ড. ইউনূস-সমর্থক প্রবাসীদের একটি বৃহৎ অংশ তাঁর জন্য উষ্ণ অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এই পটভূমিতে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের এক খোলা চিঠি। হাউস অব কমন্সের অফিসিয়াল প্যাডে লেখা এই চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান এবং তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক লেখেন, “আমি সবসময় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সুস্থ ও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির ভূমিকা এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি চিঠিতে একটি ভুল বোঝাবুঝির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন, যেখানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি তদন্তকে কেন্দ্র করে তাঁর মায়ের নাম উঠে আসে। টিউলিপ লেখেন, “আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছি এবং বাংলাদেশে আমার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই।”

তিনি আরও জানান, ব্যক্তিগত আলোচনায় অংশ নিতে তিনি আগ্রহী এবং ড. ইউনূসকে তাঁর আইনজীবীদের প্রেরিত প্রতিবাদপত্র ও একটি সংসদীয় রিপোর্টের কপি শেয়ার করতে চান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের এই সফর যেমন কূটনৈতিক — তেমন রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বের। কেউ কেউ মনে করেন, টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ অনেক অজানা তথ্য সামনে আনতে পারে। অন্যরা এটিকে ব্রিটিশ সাংসদদের কূটনৈতিক শিষ্টাচারের অংশ হিসেবে দেখছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে ড. ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক ও আলোচনা ঘনিভূত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে লন্ডনে তাঁর সফর এবং একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপির প্রকাশ্য সমর্থন—সফরের তাৎপর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

আগামী কয়েকদিনে লন্ডনের রাজপথে হয়তো দেখা যাবে সমর্থন ও বিরোধিতার দুই বিপরীত চিত্র। তবে মূল প্রশ্নটি থেকে যাচ্ছে—এই সফর কি শুধুই একটি রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা, নাকি শুরু হতে চলেছে নতুন কোনো রাজনৈতিক অধ্যায়?