আজ সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৭, ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code

টাইমস নিউজ

Manual4 Ad Code

আজ ৭ নভেম্বর। ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটেছিল, যা দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পালটে দিয়ে দেশ ও জাতিকে নতুন পরিচয়ে অভিষিক্ত করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সেনা অভ্যুত্থান ও পালটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যখন চরম নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, তখন সিপাহি-জনতার মিলিত ঐক্যের বিপ্লব দেশ ও জাতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছিল। অভূতপূর্ব সেই বিপ্লব-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাময়িক বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন স্বাধীনতার ঘোষক তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। বিএনপি সরকারের আমলে এ দিনটিতে সরকারি ছুটি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এ ছুটি বাতিল করে। আওয়ামী শাসনামলে দিবসটি স্বচ্ছন্দে উদযাপনও করতে পারেনি দলটি। এবার দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। ঘোষণা করেছে ১০ দিনের কর্মসূচি। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়। এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।

Manual3 Ad Code

সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানের লেখা ‘কিছু স্মৃতি কিছু কথা’ বইয়ে তিনি উলে­খ করেন, ‘৭ নভেম্বর গোটা দেশজুড়ে সৈনিক-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত এক অভূতপূর্ব উত্থান ঘটে। আর জেনারেল জিয়া সে অভ্যুত্থানের উত্তাল তরঙ্গমালার শৃঙ্গে আরোহণ করে উঠে আসেন জাতীয় নেতৃত্বে পাদপ্রদীপে।’ ৭ নভেম্বরের বিপ্লব সম্পর্কে তদানীন্তন দৈনিক বাংলার রিপোর্টে বলা হয়, ‘সিপাহি ও জনতার মিলিত বিপ্লবে চার দিনের দুঃস্বপ্ন শেষ হয়েছে। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন। ৭ নভেম্বর ভোরে রেডিওতে ভেসে আসে, ‘আমি মেজর জেনারেল জিয়া বলছি।’ জেনারেল জিয়া জাতির উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে যথাস্থানে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। ওইদিন রাজধানী ঢাকা ছিল মিছিলের নগরী। পথে পথে সিপাহি-জনতা আলিঙ্গন করে একে অপরকে। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কের নলে পরিয়ে দেন ফুলের মালা। এই আনন্দের ঢেউ রাজধানী ছাড়িয়ে দেশের সব শহর-নগর-গ্রামেও পৌঁছে যায়।’

Manual4 Ad Code

বাণী : দিবসটি উপলক্ষ্যে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি। পৃথক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই মহান দিনে দেশবাসী সবাইকে আহ্বান জানাই, এখনো দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চূড়ান্ত উত্তরণ হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ সাধন করতে হবে।

তিনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই একই চেতনা বুকে ধারণ করে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

কর্মসূচি : মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে দশ দিনের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। এ উপলক্ষ্যে বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আজ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ১০টায় দলের সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ। এদিন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) গেটসংলগ্ন বহিরাংশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। আগামীকাল ৮ নভেম্বর দুপুর ৩টায় ঢাকায় ও জেলায় জেলায় র‌্যালি এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। দেশব্যাপী বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছে।

এদিকে এক বিবৃতিতে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা ও ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। দিবসটি উপলক্ষ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি, ১২ দলীয় জোটসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও নানা কর্মসূচি পালন করবে।

 

Manual4 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code