আজ রবিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমাদের পোশাক জয় করেছে ইউরোপের বাজার

editor
প্রকাশিত মার্চ ২২, ২০২৫, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ণ
আমাদের পোশাক জয় করেছে ইউরোপের বাজার

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code

টাইমস নিউজ 

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে ১৯৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলারে পৌঁছেছে।

যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১২৯ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউরোপে পোশাক রফতানির এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে ইউনিট মূল্য কমে যাওয়ায় মুনাফা বজায় রাখার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

Manual3 Ad Code

ইইউ’র পরিসংখ্যান অফিস ইউরোস্ট্যাটের প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। তাদের তথ্য বলছে, গতবছরের তুলনায় এবছর জানুয়ারিতে সামগ্রিকভাবেই ইউরোপের বাজারে পোশাক আমদানি বেড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে জানুয়ারি মাসে পোশাক আমদানি হয়েছে ৮৫৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের। যা গতবছরের একই সময়ে ছিল ৬৮৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের। সেই হিসাবে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ।

ইইউ’র বাজারে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পাশাপাশি পোশাক রফতানিতে ভালো করেছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামও। ইউরোপের বাজার দখলে সবচেয়ে এগিয়ে চীন; তবে প্রবৃদ্ধিতে তারা বাংলাদেশে তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। ইইউ’র বাজারে চীনের রফতানি ৩৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৬ কোটি ডলারে।

Manual4 Ad Code

এছাড়া ভারতের ৩৭ শতাংশ বেড়ে ৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার; পাকিস্তানের ২৫ শতাংশ বেড়ে ৩৬ কোটি ডলার; কম্বোডিয়ার ৬৪ শতাংশ বেড়ে ৪৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং ভিয়েতনাম ২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ২০ লাখ ডলারে। অন্যদিকে রফতানি প্রবৃদ্ধি সামান্য কমেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ তুরস্কের। দেশটির প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ০৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিটওয়্যার রফতানি বেড়েছে ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং ওভেন পোশাক রফতানি বেড়েছে ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ। পরিমাণের দিক থেকে এই মাসে পোশাক রফতানি হয়েছে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৬০ টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

Manual3 Ad Code

বিশ্লেষকদের মতে, বেশ কয়েকটি কারণ বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে মূল্য সংযোজনযুক্ত পোশাক উৎপাদন, চীনের সঙ্গে চলমান শুল্কযুদ্ধের সুবিধা গ্রহণ, ইইউ বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং উদ্যোক্তা-শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এসব কারণ ক্রেতাদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের পোশাক খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে।

তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ইইউ’র দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী দেশ। তবে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। মূল্য সংযোজন বাড়াতে হবে, উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ আগামী দিনে বাংলাদেশের পোশাক খাতের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

২০২৫ সালের পুরো বছরজুড়ে ক্রমবর্ধমান ক্রয়াদেশ প্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রতিযোগিতার এই বাজারে টিকে থাকতে হলে মূল্য সংযোজন, নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং বহুমুখীকরণে জোর দিতে হবে বলেও মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিশ্ববাজারের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ক্রেতাদের আস্থা ও উৎপাদন দক্ষতার উন্নতি বাংলাদেশের পোশাক খাতকে আরও এগিয়ে নিচ্ছে। এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে, বাজার বহুমুখীকরণ এবং মূল্য সংযোজনের দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই প্রবৃদ্ধি রফতানিকারকদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।’ তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশসহ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, রফতানির পরিমাণ ৪১ শতাংশ বাড়লেও ইউনিট মূল্য ১১ শতাংশ কমেছে, যা মুনাফার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তিনি নতুন বাজার খোঁজা, উচ্চমানের পণ্য উৎপাদন ও কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেন।

Manual3 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code