আজ সোমবার, ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লন্ডনে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৯, ২০২৫, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ণ
লন্ডনে  বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code

লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া 
যুক্তরাজ্যের দ্য লন্ডন ক্লিনিক নামের একটি হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য সাড়ে সাত বছর আগে যুক্তরাজ্যেই চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন খালেদা জিয়া। তখন চোখ ও পায়ের চিকিৎসা নিয়েছিলেন। বর্তমানে লিভার সিরোসিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) লন্ডন স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের আমিরের পাঠানো স্পেশাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে অপেক্ষা করছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ অন্যান্যরা। পরে যখন হুইল চেয়ারে করে মা খালেদা জিয়া ছেলের কাছে আসেন সেই সময় সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানান তারেক রহমান। মুহূর্তেই সেখানে আবেগঘন মধুর পরিবেশ তৈরি হয়। এসময় তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান উপস্থিত ছিলেন।যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।চেয়ারপারসনের প্রেস উইং জানায়, লন্ডনের স্থানীয় বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তারেক রহমান মাকে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা ১১টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছান তারা। সেখানে অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি:
দ্য লন্ডন ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি একজন স্বনামধন্য লিভার বিশেষজ্ঞ। লিভারের ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ে কাজের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, তিনি লন্ডনে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। ২০০৯ সালে বার্টস অ্যান্ড দ্য লন্ডন স্কুল অব মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টিস্ট্রিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।প্রফেসর প্যাট্রিক কেনেডি ক্রনিক হেপাটাইটিস বি (সিএইচবি) রোগ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর এই গবেষণার প্রধান লক্ষ্য ছিল লিভারের ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতির বিকাশ ঘটানো। এ বিষয়ে ২০০টির বেশি গবেষণাপত্র, ৯০টির বেশি পিয়ার রিভিউড আর্টিকেলসহ একাধিক বই লিখেছেন প্যাট্রিক কেনেডি। তিনি হেপাটোগ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি নিয়েও একটি বই সম্পাদনা করেছেন।
প্রফেসর কেনেডি একজন ফিজিশিয়ান কনসালট্যান্ট এবং হেপাটোলজিস্ট হিসেবে আছেন। তিনি তরুণদের লিভার রোগ নিয়ে কাজ করছেন। পেশাদার ক্রীড়াবিদ ও প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ক্লাবগুলোতেও তিনি লিভার রোগ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের লিভার রোগ নিয়ে পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। প্রফেসর কেনেডি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একজন বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা এবং এইচবিভি ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া ইউরোপীয় লিভার রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের এইচবিভি ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস গাইডলাইন কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন।ইউনাইটেড কিংডম অ্যাডভাইজরি প্যানেলের (ইউকেএপি) হয়ে রক্তের ভাইরাস রোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়ে থাকেন প্রফেসর কেনেডি। তিনি ব্রিটিশ ভাইরাল হেপাটাইটিস গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান।প্রফেসর কেনেডি লিভারের ভাইরাল রোগের অভিনব থেরাপি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি এই রোগের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেরাপির ফেজ ১, ২ ও ৩-এর প্রধান। প্রফেসর কেনেডি এইচবিভি অ্যান্ড মি নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর গবেষণা ও রোগীদের সঙ্গে সর্বাত্মক যোগাযোগ রেখে স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রফেসর কেনেডির রোগী দেখার ফি ৩৫০ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫২ হাজার ৫৪৯ টাকা প্রায়। রোগীর ফলোআপে ফি নেন ২৫০ পাউন্ড বা ৩৭ হাজার ৫৩৫ টাকা।উল্লেখ্য, ৮ জানুয়ারি বুধবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যায় সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডন ক্লিনিক হাসপাতালে। হাসপাতালে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলে বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code