আজ শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইলিশের গায়ে উৎসবের আগুন, সব্জির দাম বেড়েছে

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১১, ২০২৫, ০৪:০২ অপরাহ্ণ
ইলিশের গায়ে উৎসবের আগুন, সব্জির দাম  বেড়েছে

Sharing is caring!

Manual3 Ad Code

টাইমস নিউজ

দুই দিন পরেই বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ। দিনটিকে ঘিরে বাজারে অন্যান্য দিনের তুলনায় ইলিশ মাছের বিক্রি বেড়েছে। তবে চড়া দামের কারণে এই মাছ কিনতে ক্রেতাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। আগে থেকেই বেশি দামে বিক্রি হওয়া এই মাছের দাম আজও আকাশছোঁয়া।

অন্যদিকে, বাজারে সবজির দামও বেড়েই চলেছে। রোজার সময় দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। সবজির দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিক্রেতারা বলছেন, সামনে এই দাম আরও বাড়তে পারে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র।

আজকের বাজারে আকার, ওজন ও মান অনুযায়ী ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত। আজকে প্রতি কেজি ৩৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা, ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০ টাকা, ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ (কোল্ডস্টোরেজ) ২০০০ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ (কোল্ডস্টোরেজ ছাড়া) ২৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৬০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ১০০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ (চাষের) ২৫০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০-১০০ টাকা, চিতল মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, সরপুঁটি মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, কাজলী মাছ ১৩০০-১৪০০ টাকা, বাতাসী মাছ ১৩০০-১৪০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Manual6 Ad Code

ইলিশ মাছের দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলেন, ইলিশ মাছের দাম সবসময়ই বেশি থাকে। পহেলা বৈশাখ বলে দাম বাড়েনি। তারা আরও বলেন, অন্যদিন যে পরিমাণ মাছ বিক্রি হতো আজকে তার থেকে কিছুটা বেড়েছে।

ইদ্রিস আলী নামে এক ইলিশ বিক্রেতা বলেন, আমি অন্যান্য মাছের সাথে ইলিশ মাছও বিক্রি করতাম। কিন্তু কয়েক দিন ধরে আমি বিক্রি করছি না, বেশি দাম। মানুষ কেনার সাহস করে না। আমার লসে পড়তে হয়।

এদিকে ইলিশ কিনতে আসা এক ক্রেতা মাহফুজুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত দামের কারণে আসলে সবসময় ইলিশ কেনা হয় না। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আধা কেজি ওজনের দুইটা ইলিশ কিনেছি বাসার জন্য। দাম আসলে সবসময়ের মতো আজকেও বেশি। বৈশাখ উপলক্ষে বেড়েছে এমনটা মনে হয়নি। আমি না কিনলেও অন্য সময় এসে দাম জেনে যাই।

আরেক ক্রেতা হারুন উর রশিদ বলেন, বাজারে মাছের দাম অনেকটাই বেশি। শুধু যে ইলিশ মাছের দাম বেশি সেটা না, অন্য মাছের দামও বেশি। আবার নদীর বলে বেশি দামে যেসব মাছ বিক্রি করা হয় সেটা আসলে কতটা সত্য সেটাও একটা ব্যাপার।

 

ঈদের পর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে সবজির দাম। আজও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বেশিরভাগ সবজিরই দাম আজ বেড়েছে। আর দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টি না হওয়াকে দেখিয়েছে বিক্রেতারা। একইসাথে সামনে আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি টক টমেটো ৭০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৯০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১৬০ টাকা, পেঁপে ৬০-৭০ টাকা, মুলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, সজনে ১০০-১২০ টাকা, পটোল ৮০ (হাইব্রিড)-১৪০ (দেশি) টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৯০-১০০ টাকা, ঝিঙা ১২০ টাকা, বরবটি ৯০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা করে।

গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে প্রতি কেজিতে টক টমেটোর দাম বেড়েছে ২০ টাকা, শিমে বেড়েছে ২০ টাকা, লম্বা বেগুনে বেড়েছে ১০ টাকা, কাঁকরোলে বেড়েছে ২০ টাকা, চিচিঙ্গায় বেড়েছে ১০ টাকা, ধুন্দলে বেড়েছে ১০-২০ টাকা, ঝিঙায় বেড়েছে ২০ টাকা, ধনেপাতার দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। আর প্রতি পিসে ফুলকপির দাম বেড়েছে ১০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজিতে শসার দাম কমেছে ১০-২০ টাকা, মুলার দাম কমেছে ১০ টাকা, সজনের দাম কমেছে ৩০ টাকা, দেশি পটোলে কমেছে ২০ টাকা, বরবটিতে কমেছে ১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

Manual7 Ad Code

সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, বৃষ্টি না হওয়ার কারণে দাম বেড়েছে। মাঝে মাঝে একটু বৃষ্টি হলে সবজির উৎপাদন ভালো হতো। তখন দাম কমতো। আবার বেশি বৃষ্টি হলে সবজি নষ্ট হয়ে যাবে তখনও দাম বাড়বে।

সামনে সবজির দাম বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দাম বাড়লে আমাদেরই লস। বেচাকেনা কমে যায়। তাই দাম না বাড়ুক এটাই আমরা চাই।

বাজার করতে আসা ক্রেতা হাবিবুর রহমান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আবারও সব সবজির দাম আগের মতো বেড়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ সবজির দামই ৭০/৮০ টাকার ওপরে। রোজার মাসে ভালোই ছিলাম। এখন সামনে কী হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা।

 

আজকে মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন ক্রস পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৪৫ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আজকে প্রতি কেজি সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকায়। বগুড়ার আলু ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আজকে নতুন দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১৪০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা করে। আর চায়না আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা এবং ভারতীয় আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

লাল আলুর দাম বেড়েছে ৫ টাকা, নতুন দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। আর প্রতি কেজিতে চায়না আদার দাম কমেছে ২০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিক্রেতা বলেন, এখন যেসব পেঁয়াজ আসছে সেগুলো বীজ থেকে করা। আগে যেগুলো এসেছিল সেগুলো পেঁয়াজ থেকে গাছ করে করা। তাই ওগুলোর দাম কম ছিল। এখনকার পেঁয়াজ দীর্ঘদিন রেখে খাওয়া যাবে, নষ্ট হবে না। তাই এগুলোর দাম কিছুটা বেশি।

Manual3 Ad Code

ঈদের পর থেকে কমতে শুরু করেছে মুরগির মাংসের দাম। আজও তা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে ডিমের দাম বাড়লেও আজকে কিছুটা কমেছে।

আজকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আজকে ওজন অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি ১৭৫-১৯০ টাকা, কক মুরগি ২৫৫-২৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৬২০-৬৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫ টাকা, সাদা ডিম ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনা করলে দেখা যায়, প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ১৫-২০ টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে ৩০-৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ৫ টাকা, দেশি মুরগির দাম কমেছে ১০ টাকা। এছাড়া ডজনপ্রতি লাল ও সাদা ডিমের দাম কমেছে ৫ টাকা করে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম রয়েছে উচ্চ দামেই অপরিবর্তিত।

 

আজকের বাজারে প্রতি কেজি ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম ১৬৫০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০-৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ১৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২০ টাকা, খোলা চিনি ১১৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Manual4 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code