আজ মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেকারণে ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র বিরোধিতা করছে বাংলাদেশ

editor
প্রকাশিত মার্চ ২৮, ২০২৫, ১২:২১ অপরাহ্ণ
যেকারণে ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র  বিরোধিতা করছে বাংলাদেশ

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code

টাইমস  নিউজ 

‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র বিরোধিতা করছে বাংলাদেশ । পাশাপাশি‘এক চীন নীতি’র প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ‘ একইসঙ্গে ‘তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ কাজের আন্তর্জাতিক নিলামে চীনা কোম্পানির অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রকাশিত যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উভয় পক্ষই জোর দিয়ে বলেছে—‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব ২৭৫৮’-এর কর্তৃত্ব কোনও প্রশ্ন বা চ্যালেঞ্জের ঊর্ধ্বে।

বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার’ পুরো চীনের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র বৈধ সরকার এবং তাইওয়ান চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’-এর বিরোধিতা করে। চীনের মূল স্বার্থ এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের প্রচেষ্টা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ চীনকে সমর্থন করে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ যোগদান করা এবং চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ২৬ মার্চ চীন সফরে যান। চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বেইজিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং ও উপ-রাষ্ট্রপতি হান ঝেংয়ের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে।

চুক্তি সই

Manual8 Ad Code

প্রধান উপদেষ্টার সফরকালে উভয় পক্ষ বেশ কয়েকটি দলিলে সই করে। এর মধ্যে রয়েছে দুই সরকারের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি এবং ধ্রুপদী সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সংবাদ বিনিময় এবং গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় ও সহযোগিতা সম্পর্কিত অন্যান্য সহযোগিতার দলিল।

পানি সহযোগিতা

উভয় পক্ষ জলবিদ্যুৎ পূর্বাভাস, বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন, জল সম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, জল সম্পদ উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ভাগাভাগির মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইয়ারলুং জানবো-যমুনা নদীর জলবিদ্যুৎ তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সইয়ের বিষয়ে উভয় পক্ষ ইতিবাচকভাবে কথা বলেছে।

তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য চীনা কোম্পানিগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এবং নীল অর্থনীতি সহযোগিতার সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ সামুদ্রিক বিষয়ে বিনিময় জোরদার করতে এবং উপযুক্ত সময়ে সামুদ্রিক সহযোগিতার ওপর নতুন দফা সংলাপ আয়োজন করতে সম্মত হয়েছে।

মুক্তবাণিজ্য চুক্তি

‘চীন-বাংলাদেশ মুক্তবাণিজ্য চুক্তি’র ওপর আলোচনা দ্রুত শুরু করার এবং চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ চুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে উভয়পক্ষ।

Manual4 Ad Code

চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশ তার প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ

Manual4 Ad Code

চীনের প্রেসিডেন্টের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মানবজাতির সবার জন্য ভবিষ্যৎ সম্প্রদায় গড়ে তোলার দৃষ্টিভঙ্গি এবং চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগের প্রশংসা করে।

রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং কর্তৃক প্রস্তাবিত বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ এবং বৈশ্বিক সভ্যতা উদ্যোগের বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ অবহিত আছে বলে জানানো হয়।

Manual4 Ad Code

রোহিঙ্গা সমাধান

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে চীনের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে এবং দেশটি তার সর্বোচ্চ সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে।

মিয়ানমারের শান্তি আলোচনা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষদের সমস্যা সমাধানে চীনের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য চীন বাংলাদেশের প্রশংসা করে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সমর্থন করে।

বিআরআই

উভয়পক্ষ বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা উন্নীত করতে, শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে এবং উভয় দেশে আধুনিকীকরণ অর্জনের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে চীন দীর্ঘস্থায়ী এবং জোরালো সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এবং সেতু, সড়ক, রেলপথ, নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার মতো চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা প্রকল্পগুলোর দ্বারা উৎপাদিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের প্রশংসা করেছে।

চীন অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং শিল্পায়নকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং বাণিজ্যিক নীতি এবং বাজারভিত্তিক পদ্ধতি অনুসারে টেক্সটাইল ও পোশাক, পরিষ্কার শক্তি, ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃষি এবং উৎপাদনের মতো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ সহযোগিতা পরিচালনা করতে চীনা কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করবে।

বাংলাদেশ মোংলা বন্দর সুবিধা আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য চীনা কোম্পানিগুলোকে স্বাগত জানায় এবং চট্টগ্রামে চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চল আরও উন্নত করার জন্য চীনা পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code